আফগানিস্তানের জব্দকৃত ৩৫০ কোটি ডলার পাচ্ছে না ৯/১১ এর ক্ষতিগ্রস্তরা
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চারটি বিমান অপহরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে হামলা চালায় জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়েদা। এই হামলার পরই যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার জব্দ করা হয়। গত বছর মানবিক বিবেচনায় সেই অর্থের অর্ধেক আফগানিস্তানে দেওয়ার নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে, সেই অর্থ পেতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আপিল করেছিল ৯/১১-এ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সেই আপিল খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনের ডিস্ট্রিক আদালতের বিচারক জর্জ ড্যানিয়েলস এ রায় দিয়েছেন। আর আপিল করেছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর ১০ হাজারেরও বেশি সদস্য।
এ রায়কে জঙ্গি সহায়তাকারী বলে আখ্যা দিচ্ছেন আপিলকারীরা। তাদের মতে, এই অর্থ আফগানিস্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া মানে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি।
তবে বিচারক বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের আপিল কখনই সফল হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, আফগানিস্তানের মানবিক সংকটের কথ বিবেচনা করে খোদ প্রেসিডেন্ট এই অর্থের অর্ধেক তাদের দেওয়ার কথা বলেছেন।
রায়ে বিচারক ড্যানিয়েল লেখেন, ‘সন্ত্রাসবাদ রায় কার্যকরের মধ্যেও একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ রয়েছে। কিন্তু, সেই রায়ের প্রয়োগ অবশ্যই মার্কিন সংবিধান, ফেডারেল আইন ও রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী হতে হবে।’
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে রায় দিতে গিয়ে ড্যানিয়েল বলেন, ‘এই অর্থ আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে দেওয়া মানে তাদের স্বীকৃতি দেওয়া। তবে, এখনও বাইডেন প্রশাসন তালেবানদের স্বীকৃতি দেয়নি।’
ম্যানহাটনের এই বিচারক আরও বলেন, ‘এই অর্থ তালেবানের জন্য। কারণ টুইন টাওয়ারে হামলার জন্য তারা দায়ী নয়। তারা সাবেক ইসলামিক রিপাবলিক অফ আফগানিস্তান বা আফগান জনগণ নয় যে, টুইন টাওয়ার হামলায় তাদেরকে দায় পরিশোধ করতে হবে।’
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসে তালেবানরা। এর ছয় মাস পরেই অর্থাৎ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে জমা আফগানিস্তানের প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের অর্ধেক ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন বাইডেন। একইসঙ্গে বাকি অর্ধেক অর্থ আফগানিস্তানে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন তিনি।