দাবানল থেকে বেঁচে ফেরা নারীর আর্তনাদ ‘যেন নরকে ছিলাম’
ঘুম ভেঙে দেখি চারপাশে অন্ধকার। ঘরে বিদ্যুৎ নেই। বাড়ির চারদিকে আগুনে ঘেরা। যেন নরকে ছিলাম। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না, পানির ট্যাংকের পাশে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লাম। আর প্রার্থনা করছিলাম- ‘দয়া করো ঈশ্বর, দয়া করো, আমার বাড়িটা বাঁচান, এটাই আমার সব।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল থেকে বেঁচে ফেরা এক নারী এভাবেই নারকীয় পরিস্থিতির বর্ণনা দিচ্ছিলেন। রায়া রেনাগা নামের ওই নারী ইটন শহরের আল্টাডেনা সম্প্রদায়ে বসবাস করতেন। তিনি হৃদস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাস পুনরুদ্ধার (সিপিআর) প্রশিক্ষক।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রায়া বলেন, ‘আপনি কল্পনা করতে পারেন, আমি আমার বাড়ি হারিয়েছি, যেখানে আমি ২৮ বছর ধরে বসবাস করেছি।’
আগুনের ধ্বংসলীলার বর্ণনা দিয়ে ওই নারী বলেন, প্রতিবেশীর বাড়ি, আমার বাড়ির গ্যারেজ আগুনে গ্রাস করতে দেখেছিলাম। তখন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আমাকে উদ্ধার করতে আসে।
বেঁচে ফেরা অনিশ্চিত ছিল জানিয়ে রায়া বলেন, আমি ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের আমার গাড়ি চালাতে অনুরোধ করি। কারণ আমার বিড়ালগুলো গাড়িতে ছিল। এক পর্যায়ে আমাকেই গাড়ি চালাতে হয়, আমি শুধু উদ্ধারকারী গাড়িকে অনুসরণ করছিলাম। চারদিকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। আগুনের কণা, পোড়া গাছের টুকরা গাড়ির ওপর আছড়ে পড়ছিল। আমরা জানতাম না, বেঁচে ফিরতে পারব কিনা!
এঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে দশজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দাবানলে ইতোমধ্যে সেখানকার প্রায় ৩১ হাজার একর এলাকা পুড়ে ছাই হয়েছে। প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, আরও ২ লাখ মানুষকে সতর্কতার আওতায় রাখা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে ইটন এলাকা থেকে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে।