নওগাঁয় মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার, শাশুড়ি আটক
নওগাঁর মান্দায় শয়নকক্ষ থেকে মা ও দুই বছর বয়সী ছেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার গণেশপুর ইউনিয়নের সরদারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
আজ রোববার সকালে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিহত গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুর পলাতক রয়েছেন।
নিহত মা-ছেলে মান্দা উপজেলার গণেশপুর সরদারপাড়ার ময়েন উদ্দিনের স্ত্রী আমেনা খাতুন (২২) ও তাঁর ছেলে আমির হামজা (২)। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহত আমেনা খাতুনের শাশুড়ি এজেদা বিবিকে (৫০) আটক করেছে পুলিশ।
নিহত আমেনা খাতুনের চাচা সাগর মাহমুদ জানান, ভাতিজি আমেনা খাতুনের বাড়ি নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের রাজাপুর দরগাপাড়ায়। প্রায় পাঁচ বছর আগে মান্দা উপজেলার গণেশপুর সরদারপাড়ার আবেদ আলী মৃধার ছেলে ময়েন উদ্দিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় জামাইকে ডিসকভার মোটরসাইকেল, সোনার গহনাসহ ঘর সাজানোর বিভিন্ন আসবাবপত্র উপঢৌকন হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। এরপরও টাকার দাবিতে মাঝেমধ্যেই ভাতিজি আমেনা খাতুনকে মারধরসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে আসছিল জামাইসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
সাগর মাহমুদ বলেন, প্রায় তিন মাস আগে আমেনা খাতুনকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর সে বাবার বাড়িতেই ছিল। তিন সপ্তাহ আগে মান্দার গণেশপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নিয়ামতপুরের শ্রীমন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় সালিশের পর সমঝোতা হওয়ায় আমেনাকে জামাই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর কয়েকদিন মাথায় ভাতিজি ও তাঁর দুই বছরের ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করল জামাইসহ তাঁর পরিবারের লোকজন।
নিহত আমেনার মামা আশরাফুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে গতকাল রাত ১১টার দিকে ভাগ্নির জামাইবাড়ি গিয়ে শয়নঘরের খাটের ওপর মা ও ছেলের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে লাশ দুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এ সময় জামাই ময়েন উদ্দিন ও বেয়াই আবেদ আলীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আজ রোববার সকালে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মা ও ছেলের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ওসি আরও বলেন, ঘটনায় নিহত আমেনা খাতুনের শাশুড়ি এজেদা বিবিকে আটক করা হয়েছে। স্বামী ময়েন উদ্দিন ও শ্বশুড় আবেদ আলী মৃধাকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। এ ব্যাপারে মান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।