হিলিতে একমঞ্চে মাতৃভাষা দিবস পালন করল দুই বাংলা
দিনাজপুরের হিলি সীমান্তের শূন্য আঙিনায় উদযাপিত হয়েছে অমর একুশে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের মানুষ একমঞ্চে পালন করে দিবসটি। হাজার হাজার মানুষের পদচারণে মুখর হয় সীমান্ত।
আজ মঙ্গলবার সকালে সীমান্তের শূন্যরেখায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মো. মোস্তাফিজুর রহমান ভারত থেকে আসা অতিথিদের বরণ করে নেন। এ সময় শূন্যরেখার পাশে নির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আয়োজক ও অতিথিরা। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এরপর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে সেখানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক।
ভারত থেকে আসা অতিথিদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের জয়েন্ট মুভমেন্ট অব করিডর কমিটির আহ্বায়ক নবকুমার দাস ও বালুরঘাটের উজ্জীবন সোসাইটির সম্পাদক সুরজ দাস।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত, সাপ্তাহিক আলোকিত সীমান্তের সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ’৫২-তেই বাঙালি বুঝিয়ে দিয়েছে যে তারা মাথা নত করার জাতি নয়। ৫২-এর প্রেরণাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বের দরবারে আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়।’
হাকিমপুর পৌরসভার মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, ‘দুই বাংলার অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে বাংলা ভাষা যে সেতুবন্ধ রচনা করেছে তাকে কাজে লাগিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হবে।’
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড এবং প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ভাষার জন্য আজকে আমরা দুই বাংলার মানুষ একই মঞ্চে প্রাণ খুলে কথা বলতে পেরেছি। এই আয়োজন প্রমাণ করে সীমান্তে এই মিলনমেলা প্রতিবছর হওয়া দরকার। তাহলে দুই বাংলার সমৃদ্ধি ও সম্প্রীতি আরো আন্তরিক হবে।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন হাকিমপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুকরিয়া পারভীন।
ভারত থেকে আমন্ত্রিত অতিথিরা বক্তব্য দেন। তাঁরা কবিতা আবৃত্তিও করেন। এরপর হাকিমপুর শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা সংগীত, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করে।
এদিকে সীমান্তে দিবসটি উদযাপন হওয়ায় ঢল নামে দুই বাংলার শত শত সাধারণ মানুষের। ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা। পরে সেখানে দুই বাংলার শিল্পীরা সংগীত, কবিতা আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন।