ছিটমহলে জমি বিক্রি বন্ধ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে থাকা ১৬২টি ছিটমহলে আগামী ১ আগস্ট পর্যন্ত জমি বেচাকেনার ওপর উভয় দেশের প্রশাসন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
তবে ছিটমহল বিনিময় চূড়ান্ত হলে এই ছিটমহলের বাসিন্দারা যদি অন্য দেশের নাগরিক হতে চায় তাহলে বর্তমান স্থানের জমি-জিরাত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে বিক্রি করে নগদ অর্থ যে দেশের নাগরিক হতে চায় সে দেশে নিয়ে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা বাসস।
আজ শুক্রবার ছুটির দিনও ছিটমহলে যৌথ জরিপ কাজ চলেছে। ৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত উভয় দেশের ১৬২টি ছিটমহলে যৌথ খানা জরিপ চলবে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বাংলাদেশে সফরে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় ও সীমান্ত চুক্তি নিয়ে প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। সেই সময় ছিটমহলের প্রকৃত অবস্থা জানতে দুই দেশের সরকার যৌথভাবে ছিটমহলে খানা জরিপ চালায়। এই যৌথ জরিপের চূড়ান্ত ফলাফল সেই সময় দুই দেশের প্রশাসন গ্রহণ করে। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের যৌথ খানা জরিপের প্রতিবেদনকে ভিত্তি ধরেই চলছে এবারের জরিপ।
দ্বিতীয় দফা যৌথ জরিপের পাঁচদিন চলছে। আগামী ৩১ জুলাই মধ্য রাতে দুই দেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় শুরু হবে। তাই আগামী ১ আগস্ট ছিটমহল নামের বন্দিশালা দুই দেশের মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। স্ব স্ব দেশের ভেতরে থাকা ছিটমহলগুলো সেই দেশের মূল ভূখণ্ডে পরিণত হয়ে যাবে।
বাংলাদেশের ভেতরে থাকা ছিটমহল থেকে যারা ভারতে যেতে চায়, আবার ভারতের ভেতরে থাকা ছিটমহল থেকে যারা বাংলাদেশে আসতে চায়, তারা এরই মধ্যে নাগরিকত্ব পেতে যৌথ জরিপ দলের কাছে ফরম পূরণ করতে শুরু করেছে।
তাদের দখলে থাকা জমিজিরাত ও সম্পদ তারা নগদ অর্থে বিক্রি করে অর্থ নিজ নিজ পছন্দের নাগরিকত্ব পাওয়া দেশে নিয়ে যেতে পারবে। তবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি প্রয়োজন হবে। আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের সরকার যৌথভাবে এই যুগান্তকারী সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলাদেশের পক্ষে ছিটমহল বিনিময় সমন্বয়কারী পরিষদের সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম জমি ক্রয়-বিক্রয় সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞার কথা নিশ্চিত করেছেন।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক ও যৌথ ছিটমহল জরিপ কাজের নেতৃত্বদানকারী খান মোহাম্মদ নুরুল আমীন জানান, গত ১৬ জুন কলকাতায় বাংলাদেশ ও ভারত জয়েন্ট বাউন্ডারি ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে ১ আগস্ট পর্যন্ত ছিটমহলের জমি বেচাকেনা-সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
৩০ নভেম্বর যৌথ জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে ছিটমহলবাসীদের পছন্দমতো নাগরিকত্ব নেওয়া মানুষগুলো ছিটমহল ছেড়ে পছন্দের দেশে সরকারিভাবে চলে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, যৌথ ছিটমহল জরিপের প্রতিদিনের ফলাফল প্রতিদিন পেতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) নেতৃত্ব এই তথ্য কেন্দ্র চালু রয়েছে। প্রতিদিনে ফলাফল পেতে রাত ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।