গৃহকর্মীকে নির্যাতন, স্ত্রীসহ শিক্ষক গ্রেপ্তার
গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের এক প্রভাষক ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার শহরের খেয়াঘাট রোডের একটি বাসা থেকে ইমাম হোসেন ও তাঁর স্ত্রী কামরুন নাহার মৌসুমীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসানুল হক জানান, চলতি বছরের মে মাসে ইমাম হোসেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির এলাকা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার হরতকীরটেক গ্রাম থেকে গৃহকর্মী হিসেবে তাসলিমাকে নিয়ে আসেন। তাসলিমাকে বাড়িতে আনার পর থেকেই তাঁর স্ত্রী মৌসুমী অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। নির্যাতন সইতে না পেরে গত ১১ জুলাই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় তাসলিমা। তিন দিন পর ওই মহল্লায় একটি বাড়ির সামনে তাসলিমাকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।
পরে মেয়েটি তার ওপর হওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দিলে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাসলিমাকে উদ্ধার করে এবং স্বামী-স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নির্যাতনের বিষয়ে তাসলিমা জানায়, গত তিন দিন ধরে কিছু না খেয়ে পালিয়ে ছিল সে। পাবনার এই বাড়িতে কাজের জন্য আনার পর থেকেই বাড়ির গৃহকর্ত্রী মৌসুমী তাকে ব্যাপক মারপিট করত। এমনকি বটি দিয়ে কুপিয়ে জখমও করে তাকে। এ সময় মেয়েটি তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের চিহ্ন দেখায় উপস্থিত সংবাদকর্মী ও পুলিশ সদস্যদের।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তাসলিমা জানায়, গরম খুন্তি দিয়ে মৌসুমী তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুড়িয়েও দিয়েছেন।
নির্যাতনের ব্যাপারে কামরুন নাহার মৌসুমী বলেন, ‘কথামতো কাজ না করলে মাঝে মধ্যেই আমি সামান্য ধমক দিতাম। তবে এভাবে আমি নির্যাতন করিনি। এখন তাসলিমা যদি বলে থাকে আমিই তাকে নির্যাতন করেছি, তাহলে আমার আর কিছুই বলার নেই।’
ওসি আহসানুল হক জানান, তাসলিমার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পাবনা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুন্নাহার জলি বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়া তাসলিমাকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মহিলা পরিষদ।