ঈশ্বরগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় মামলা
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় শটগানের গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭৮ নেতাকর্মীর নামে মামলা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বোরহান উদ্দিন জানান, সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবীর শাহীনের লোকজন ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি ও পুলিশি কাজে বাধা দিয়েছে। এ জন্য শাহ নুরুল কবীর শাহীন, উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি শাহ মোফাজ্জল হোসেনসহ ১৮ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৫০/৬০ জনের নামে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে মঙ্গলবার রাতে মামলা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে শাহ নুরুল কবীর শাহীন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে ঈশ্বরগঞ্জের চরনিখোলায় বিএনপি কার্যালয়ে তাঁরা সভা করছিলেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা চালায় এবং গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটা করে।
এর আগে বিএনপির ৩৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার ঈশ্বরগঞ্জে দলটির তিন অংশের নেতাকর্মীরা আলাদা আলাদা কর্মসূচির পালনের ঘোষণা দেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন জানান, উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি দাবিদার লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু ঈশ্বরগঞ্জ শহরের কাঠগোলা মৎস্য বাজারে, সাবেক সংসদ সদস্য ও আরেকটি অংশের সভাপতি দাবিদার শাহ নুরুল কবীর শাহীন চরনিখোলা গ্রামে এবং সাধারণ সম্পাদক দাবিদার ফরিদ উদ্দিন পৌর এলাকার গোহাটা বাজারে পুলিশের অনুমতি ছাড়াই দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলাদা আলাদা শোভাযাত্রা ও সমাবেশের আয়োজন করেন।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সমাবেশ শেষে মাজেদ বাবুর নেতৃত্বে শোভাযাত্রার নামে জঙ্গি মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে এ অংশের নেতাকর্মীদের কথাকাটাকাটি ও পরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চারটি শটগানের গুলি ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে জানান ওসি।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বাবু অভিযোগ করেন, বিনা উসকানিতে পুলিশ তাঁদের ওপর হামলা, গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটা করেছে। এ সময় চার সমর্থককে আটক করে নিয়ে যায়। তাঁরা হলেন রুহুল আমীন, বিল্লাল হোসেন, বকুল ও রেজ্জাক। পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হন পাঁচ-ছয়জন নেতাকর্মী।
এদিকে, চরনিখোলা গ্রামে সাবেক সংসদ সদস্য শাহ নুরুল কবীর শাহীন সভা করার সময় পুলিশ সেখানে অতর্কিতে চড়াও হয়। এ সময় দেয়াল টপকাতে গিয়ে আহত হন কয়েকজন নেতাকর্মী।
বিএনপি নেতা ফরিদ উদ্দিন অভিযোগ করেন, পৌর এলাকার গোহাটা বাজারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সভা ভণ্ডুল করে দেয় পুলিশ।
ঈশ্বরগঞ্জে আলাদা তিনটি স্থানে দলীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহ নুরুল কবীর শাহীন বলেন, ‘আমি ঈশ্বরগঞ্জ বিএনপির বৈধ সভাপতি। আর কোনো কমিটি আছে বলে আমার জানা নেই। আমি ছাড়া অন্য কেউ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান করেছে, সেটাও আমার জানা নেই। অন্য কোথাও কোনো ঝামেলা হয়েছে, সেটাও আমার নলেজে নাই। ভালো করে খবর নেন।’