কী হতে চলেছে ৩১ ডিসেম্বর?
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকজুড়ে ছড়িয়ে আছে ‘৩১ ডিসেম্বর ২০২৪’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের প্রোফাইল ও পেজে দিনটি নিয়ে নানা পোস্টে নেটিজেন ও জনমনে শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। কী হতে চলেছে ৩১ ডিসেম্বর? অবশেষে জানা গেল তা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেল সদস্য রায়হান আহমেদ তামীম তার পোস্টে লিখেছেন, ‘৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, বিপ্লবীরা প্রস্তুত তো?’। পরে যোগাযোগ করা হলে তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘৫ আগস্ট আমরা যে ঘোষণা দিতে চেয়েও দিতে পারিনি, কাফফারা হিসেবে ৩১ তারিখ সেই ঘোষণাটাই দেব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, তিনি লিখেছেন, ‘কমরেডস, ৩১শে ডিসেম্বর! এখন অথবা কখনোই না।’ পরে আরেকটি পোস্টে লেখেন, ❝Proclamation of July Revolution❞, 31st December, Shaheed Minar-3:00 pm.’ এরপর আরেকটি পোস্টে লেখেন, ‘এটা মুজিববাদের কবরের ঘোষণা।’ এরপর ফারদিন হাসানের একটি পোস্ট শেয়ার করেন, যেখানে লেখা, ‘প্রোক্লেমেশন অব রেভ্যুলেশন কেনো লাগবে? আমার, আপনার এবং আমাদের সবার অস্তিত্ব বাঁচাইতে লাগবে। আমাদের এই বিপ্লবকে সত্যিকার অর্থে বিপ্লবে রূপ দিতে এই প্রোক্লেমেশন লাগবে। এই কাজ হওয়ার দরকার ছিলো ৫ আগস্ট। কিন্তু দেরিতে হইলেও যে হচ্ছে এইটাও স্বস্তির খবর।
এখন আপনাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই প্রোক্লেমেশন জিনিসটা আসলে কী? এইটা মূলত নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আক্ষরিক অর্থে ঘোষণা। তো এই ঘোষণাটা ঠিক কী করে?
এই যে ধরেন এই সরকার, এইটা তো সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ। প্রোক্লেমেশন সে সংবিধানকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে এবং সংবিধানকে প্রোক্লেমশনের আলোকে ব্যাখ্যা এবং সংশোধন করতে বাধ্য করে। যে স্টেট সিস্টেম আমাকে বা আপনাকে এখন পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফাঁসির আসামি বানায় রাখসে, সে স্টেট সিস্টেমকে খারিজ করে দেয়।
এ ছাড়া এই প্রোক্লেমেশন আরো কী কী করতে পারবে? এই যে আমাদের নিত্যদিনের অভিযোগ থাকে যে এইটা কেনো এভাবে হচ্ছে না, ওটা কেনো ওভাবে হচ্ছ না? এই সব হিসাব-নিকাশ বদলানোর জন্যই প্রোক্লেমেশন জরুরি। রাষ্ট্রযন্ত্রের যেসকল বস্তাপচা নিয়মের কারণে সব কাজ পিছিয়ে যায় তা ছুড়ে ফেলে জুলাইয়ের আলোকে নতুন রাষ্ট্রকাঠামো তৈরির ভিত্তি হবে এই প্রোক্লেমেশন। যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন এই দেশের মানুষ দেখেছে, তা বাস্তবায়ন হবে এর মাধ্যমে।
এই কাজ হওয়া উচিত ছিল আরো অনেক আগেই। দেরি হয়ে গেছে প্রায় মাস পাঁচেক। কিন্তু তাও হচ্ছে। জুলাইকে ধারণ করা প্রতিটি ব্যাক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে এর মাধ্যমে। যে বাংলাদেশ ২.০ এর কথা আমরা এতদিন বলে এসেছি তা সত্যি হবে ৩১ তারিখ। আমি থাকব সেদিন শহীদ মিনারে মুজিববাদের কবর রচনা করতে, আপনারা থাকবেন তো?’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রিফাত রশিদ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, All eyes on 31st December, 2024. Now or Never!
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী লিখেন, Proclamation of July Revolution Now or Never !
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম লেখেন, ‘৩১ ডিসেম্বর! শহীদ মিনার, বিকাল ৩টা, এখনই সময়, বাংলাদেশের জন্য…’