সেতু নির্মাণ শেষ না করেই পুরো বিল উত্তোলন, দুদকের অভিযান
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে ৩ কিলোমিটার এইচবিবি (ইট বিছানো) সড়ক ও তিনটি খালের ওপর তিনটি সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না করে বিলের পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এমনকি সংযোগ সড়ক না থাকায় ওই ব্রিজে উঠতে গিয়ে এক দিনমজুরের বাম পা হারানোর ঘটনায় জেলা পরিষদে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (২ জানুয়ারি) সকালে দুর্নীতি দমন কমিশন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো. মশিউর রহমানের তদারকিতে একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন কার্যালয়ের উপ-পরিচলক মো. মশিউর রহমান বলেন, কাশিয়ানী উপজেলার ওড়াকান্দি ইউনিয়নের মাইজকান্দি থেকে আড়কান্দি গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এইচবিবি (ইট বিছানো) সড়ক ও তিনটি খালের ওপর তিনটি সেতু নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না করে জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঠিকাদার বিলের সমুদয় অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে আজ বুধবার অভিযান চালিয়ে ফাইলপত্র যাচাই-বাছাই করে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে এবং পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা পরিষদের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মনির হোসেন বলেন, যে সময় ব্রিজের কাজ হয় তখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় ছিল। এর ব্রিজের কাজ করেছে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। তিনি ব্রিজের কাজ শেষ না করে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অস্ত্রের মুখে ফাইলে সই করিয়ে অর্থ তুলে নেন। প্রায়ই অস্ত্র নিয়ে সাইফুল অফিসে আসতেন। তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে বিল পরিশোধ করা হয়।
তিনটি ব্রিজ নির্মাণ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় বিগত ৯ বছর ধরে তিন গ্রামের জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় ব্রিজ দিয়ে পারাপারের সময় বাম পা হারিয়েছেন মুরাদ তালুকদার নামের এক দিনমজুর।
গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, তিনটি ব্রিজের সংযোগ সড়ক না করে সমুদয় অর্থ উত্তোলন করে দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হবে। তারপর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ঠিকাদার সাইফুল ইসলাম পলাতক থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ সময় দুর্নীতি দমন কমিশন জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সোহরাব হোসেন সোহেলের নেতৃত্বে উপসহকারী পরিচালক আফসার উদ্দিন ও আল আমিন হোসেন অভিযান পরিচালনা করেন।