‘যারা লিপুরে মাইরেছে আল্লাহ তাদের ভালো রাখুক!’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু হত্যার চার মাস পার হলেও মামলার কার্যত কোনো অগ্রগতি নেই।
লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এখনো আসেনি, অভিযোগপত্রও জমা পড়েনি। তাই বিচারের ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছেন লিপুর পরিবারের সদস্যরা।
ছেলে হত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করে লিপুর বাবা বদরউদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে মইরেছে বলে কোনো বিচার নাই। লিপু তো সাধারণ ছাত্র ছিল, ওর জন্য কিডা কানবি। কান্দিতো যদি ক্ষমতা থাকত, লিপু যদি কোন লিডার হইতো, তাইলে কান্দিত। থানা-পুলিশ কেউই টাকা ছাড়া কাজ করে না। আমি টাকা খরচ করতে পারলে লিপুর তদন্ত আগাইতো।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে বদরউদ্দিন আরো বলেন, ‘এই প্রশাসন যে লিপুর হত্যাকারীদের বিচার করবে তা বিশ্বাস হয় ক্যামন করে? আজ চার মাস হয়ে গেল কিন্তু এখন পর্যন্ত মামলার কোনো অগ্রগতি নাই। যারা মাইরেছে তারা থানা-মানা ঠিক কইরে বইসে রয়েছে।’
লিপুকে হারিয়ে দিশেহারা বাবা বদরউদ্দিন বলেন, ‘ও আমার কথামতোই চলত। তা না হলে ও ভার্সিটি যাইতই না। আমি বললাম, ফরম ফিলাপ চইলা আইছে তুমি যাবা না? টাকা পাঠালাম আর ও গেল। কিন্তু আমারে তো ও কোনোদিন কইল না আমার ওখানে বিপদ। এখন মনে হয়, ওরে না পাঠালেই হয়তো মরত না। আর যারা মাইরেছে আল্লাহ তাদের ভালো রাখুক! তারা যেন সুখে-শান্তিতে থাকে! আর আল্লাহর বিচার, আল্লাহই করব।’
গত বছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হলের ড্রেন থেকে লিপুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই লিপুর চাচা বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার অগ্রগতির বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম বলেন, ‘মামলা সিআইডির কাছে হস্তান্তরের নির্দেশনামা ১০ দিন আগে এসেছে। কিন্তু কার কাছে করা হবে তা নির্ধারণ না হওয়ায় হস্তান্তর সম্ভব হয়নি।’ তবে কিছু দিনের মধ্যেই মামলাটি হস্তান্তর করা হবে বলেও জানান তিনি।
মাহবুব আলম আরো বলেন, ‘আমরা মামলার তদন্ত কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। সিআইডির কাছে মামলা হস্তান্তরের পর তারা আমাদের তথ্যের সাহায্য নিলে খুব দ্রুতই আসামিদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’