মাস্টার্সের ২০৬ শিক্ষার্থীর নম্বরপত্রে ভুল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একটি সেশনের মাস্টার্স পরীক্ষায় সব শিক্ষার্থীর নম্বরপত্রে ভুল সিজিপিএ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশ নেন ২০৬ জন শিক্ষার্থী। সেমিস্টার পদ্ধতিতে তাদের দুই সেমিস্টারে চারটি করে মোট আটটি কোর্স ছিল। প্রত্যেক সেমিস্টারে ১২ দশমিক ৫ করে দুই সেমিস্টারে মোট ২৫ নম্বরের ভাইভা পরীক্ষা ছিল। নম্বরপত্রে উল্লেখ আছে, ২৫ নম্বরের ক্রেডিট হলো এক আর প্রত্যেক ১০০ নম্বরের কোর্সের ক্রেডিট হলো চার। সব মিলিয়ে মোট ক্রেডিট সংখ্যা ৩৩।
প্রকৃত সিজিপিএ হিসাব করার নিয়ম হলো প্রথম সেমিস্টারের রেজাল্টের সঙ্গে ১৬ দিয়ে গুণ করে তার সঙ্গে দ্বিতীয় সেমিস্টারের রেজাল্টের সঙ্গে ১৬ গুণ করে ভাইভার রেজাল্টকে ৩৩ দিয়ে ভাগ করে সেই ফলটা যোগ করা।
কিন্তু পরীক্ষার টেবুলেটর গোবিন্দ চক্রবর্তী ও মনিরুল ইসলাম ভাইভার ২৫ নম্বরকে চার ক্রেডিট ধরে মোট রেজাল্টকে ৩৬ ক্রেডিট দিয়ে ভাগ দিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য সিজিপিএ থেকে কম সিজিপিএ ফলাফলে এসেছে। একাধিক শিক্ষার্থীর নম্বরপত্র পর্যালোচনা করে এই তথ্যের সত্যতা মিলেছে।
শিক্ষার্থীরা ভুল সিজিপিএ সংশোধনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর দরখাস্তও দিয়েছেন। অন্যদিকে মার্কশিটে ভুল সিজিপিএ থাকার কথা স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। সেগুলো সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্র জানান, নিয়মানুযায়ী তাঁর ৩ দশমিক ৭১ সিজিপিএ হবে। অথচ মার্কশিটে তাঁর সিজিপিএ দেওয়া হয়েছে ৩ দশমিক ৬৭। তিনি প্রকৃত সিজিপিএ চান।
ভুলের কথা স্বীকার করেছেন পরীক্ষার টেবুলেটর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী ও সহকারী অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম। তাঁরা বলেন, মার্কশিটে ভুল হিসাব আসায় সিজিপিএ ভুল হয়েছে। তবে তা ঠিক করার সুযোগ আছে।
অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ভাইভার ২৫ নম্বরকে টেবুলেশন বইয়ে ১০০ তে কনভার্ট করা রয়েছে। বইতে ভাইভার ১০০ মার্ক দেখানো হচ্ছে। এ কারণে ভুল হয়েছে। পরীক্ষা কমিটির সভাপতি দেশের বাইরে থেকে গত বুধবার রাতে ফিরেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়েই ফলাফল সংশোধন করা হবে।
তবে পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিক বলেন, ভুল সিজিপিএ না। রেজিস্ট্রার ভবন থেকে যেভাবে গণনা করার কথা বলা হয়েছিল সেই নিয়মে করা হয়েছে।
পাঁচ বছর ধরে এই নিয়মে সিজিপিএ হিসাব করা হয়েছে উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, ছাত্ররা এবার কোনো একটি পেপারে খারাপ করেছে। এ কারণে কিছুটা গরমিল হয়েছে। কিন্তু গরমিল হওয়া উচিত নয়। সিজিপিএ সংশোধন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে গেলে তিনি উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছানা উল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ছানা উল্লাহ বলেন, পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আবেদন করলে সিজিপিএ সংশোধন করা হবে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ছাত্ররা প্রমাণ হাজির নিয়ে দরখাস্ত দিয়েছে। টেবুলেটরদের সংশোধন করার জন্য বলা হয়েছে।