ভূমিকম্পে জাবির আল-বেরুনী হলে একাধিক ফাটল
ভূমিকম্পে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনী হলের সম্প্রসারিত ভবনের দেয়ালে ৩৫ থেকে ৪০টি বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার ভোরের ভূমিকম্পের পর ওই ফাটলগুলো দেখা দিয়েছে। এতে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা সাময়িকভাবে বড় ধরনের বিপদ থেকে রেহাই পেলেও ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়েছেন তাঁরা।
আজ সকালে দেখা গেছে, আল-বেরুনী হলের ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ব্লকের উত্তর দিকের দেয়ালে প্রায় ২০ ফুট লম্বা ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। খসে পড়েছে পলেস্তারা। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি মিলনায়তনের টিভি রুমের পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকের দেয়ালের ভেতরে ও বাইরে কয়েক ফুট জায়গাজুড়ে বড়সড় ফাটল দেখা দিয়েছে।
এ ছাড়া হলের ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ ও বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ব্লকের বেশ কয়েকটি কক্ষের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল লক্ষ করা গেছে। তা ছাড়া হলের মসজিদ, কমনরুম, গেস্টরুম, ডাইনিং রুম ও স্টাফরুমেও ফাটল ধরেছে। সর্বোপরি, হলের অনেক কক্ষের দেয়ালেও ফাটল সৃষ্টি হয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আজ দুপুরে হলটি পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল খায়ের, প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা, প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক হাফিজুর রহমান, আল-বেরুনী হলের প্রভোস্ট এ কে এম জসীম উদ্দীন, হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক শেখ আদনান ফাহাদ ও প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস সালাম মো. শরীফসহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
হল পরিদর্শনের পর উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনা করে অতি শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। শিক্ষার্থীদের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।’
আল-বেরুনী হলের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮২ সালে ভর্তি করা শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য মাত্র দুই মাসের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে আধাপাকা (টিনের ছাউনি বিশিষ্ট) এ হলটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকেই হলে সমস্যা লেগেই আছে। বারবার জোড়াতালি দিয়ে হল সংস্কার করা হয়।
হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক শেখ আদনান ফাহাদ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব হলটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে এখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা উচিত।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম আবুল কালাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ভবনগুলো কতটুকু ভূমিকম্প সহনশীল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের তা গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখা উচিত। নইলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
আজ সোমবার ভোর আনুমানিক ৫টায় রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ৬ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ভারতের মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল থেকে ৩৩ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)। ঢাকা থেকে ভূমিকম্প উৎপত্তিস্থলের দূরত্ব ছিল ৩৫১ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে।