মীরপুর বাংলা স্কুলের ‘ঈদ’ উদযাপন
ঈদ আসতে এখনো ঢের বাকি। কিন্তু সেই ঈদের আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি আনন্দ করলেন মীরপুর বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা, কোলাকুলি, আড্ডা, হাসি-তামাশা, আনন্দ-কী ছিল না! সবচেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল মানুষ গড়ার কারিগর শৈশবের শিক্ষকদের দীর্ঘদিন পর দেখতে পাওয়া, তাদের সান্নিধ্য পাওয়া, পা ছুঁয়ে সালাম করা, বাবা-মায়ের মমতায় বুকে টেনে নেওয়া। আর স্মার্টফোনের এই যুগে বন্ধু আর শিক্ষকদের সঙ্গে সেলফি উৎসব তো ছিলই।
মীরপুর বাংলা স্কুলের এই ঈদ উৎসব বসেছিল গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সোহাগপল্লীতে গতকাল শুক্রবার। সকালে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল মীরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে।
বাস ছাড়তে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে একটু দেরি হলেও তাতে অধৈর্য হননি শিক্ষার্থীরা। ততক্ষণে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাবাজি আর কুশলবিনিময় চলে। পথে আশুলিয়ায় দীর্ঘক্ষণ বাস যানজটে আটকে থাকায় সোহাগপল্লীতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেশ দেরি হয়ে যায়। সোহাগপল্লীতে পৌঁছেই শুরু হয়ে যায় আনন্দ-উল্লাস। এই উৎসবে যোগ দেয় প্রায় দুই হাজার প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও তাঁদের স্বজনেরা।
মূল মঞ্চে রাখা হয় মীরপুর বাংলা স্কুলের ৫০ বছর পূর্তির বিশাল কেক। কেকটি ছিল ১৯৮১ সালের এসএসসি ব্যাচের। ওই কেককে ঘিরে একেকটি ব্যাচের গ্রুপ ছবি তোলা হয়। জুমার নামাজের পর শুরু হয় পুনর্মিলনীর আনুষ্ঠানিকতা। প্রথমেই জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সৈয়দ আবদুল কাইয়ুম, সাবেক প্রধান শিক্ষক আবেদা সুলতানা, রঞ্জিত মল্লিক ও সেলিম স্যার। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচ ১৯৭৩-এর শিক্ষার্থী মেসের আলী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী আকবর আলী, ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষক মতিউর রহমান মতি প্রমুখ।
এদিকে ১৯৯৪ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষক সৈয়দ আবদুল কাইয়ুমসহ বিদ্যালয়ের ২৫ জন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও পুনর্মিলনীর আয়োজকদের সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। এরপর বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন বিদ্যালয়ের সূচনা সংগীত। শুরু হয় জমজমাট নাচ-গান ও হাসানোর পর্ব। সেই সঙ্গে চলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টি-শার্ট, স্মারক ক্রেস্ট ও ব্যাগ প্যাক প্রদান কার্যক্রম। সবার শেষে হয় আকর্ষণীয় র্যাফল ড্র। এরপর এক রাশ বেদনা নিয়ে আবারও পুনর্মিলনীর আশায় সোহাগপল্লী ছাড়েন সবাই।