খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা করা হচ্ছে : মির্জা ফখরুল
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যের বিকৃত ব্যাখ্যা করে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার রাতে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গত ২১ ডিসেম্বর ২০১৫ সোমবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রদত্ত ভাষণের একটি অংশের বিকৃত ব্যাখ্যা করে ক্ষমতাসীন মহল যে অপপ্রচার ও বিভিন্ন মতলবী কার্যক্রম শুরু করেছে, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের তালিকা ও পরিচিতি আজ পর্যন্ত সংরক্ষিত না থাকায় স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বিভিন্ন শক্তি ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে নানা ধরনের তথ্য ও বিতর্ক উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন গ্রন্থে শহীদদের বিভিন্ন রকম সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। দেশনেত্রী সে কথাই তুলে ধরেছেন তাঁর বক্তব্যে।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘এর মাধ্যমে তিনি মহান শহীদদের পরিচিতি ও প্রকৃত সংখ্যা নিরুপণের প্রয়োজনীয়তার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন, যাতে তাঁদের উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করা যায়। এই কথা বলার মাধ্যমে শহীদদের প্রতি কোনো ধরনের অসম্মান প্রদর্শনের প্রশ্নই আসে না। যারা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে নাই বরং ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সাজিয়ে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করেছে এবং যারা প্রকৃত শহীদদের তালিকা ও পরিচিতি সংরক্ষণের মাধ্যমে তাদের সম্মানিত করতে চায় না, তারাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে বিকৃত ব্যাখ্যা করে অপরাজনীতিতে মেতে উঠেছে। আমরা তাদের এই হীন অপপ্রচার ও তৎপরতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি এই ধরনের হীন অপপ্রচারের মাধ্যমে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘ওই ভাষণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া স্বাধীনতা যুদ্ধে মহান শহীদদের সংখ্যা নিয়ে যে বিভ্রান্তি ও বিতর্ক রয়েছে রেফারেন্স হিসেবে সে কথার উল্লেখ করেছিলেন। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষক বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম প্রতিষ্ঠিত বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধে বিশ্বাসী এ দেশের সর্ববৃহৎ একটি রাজনৈতিক দল। রণাঙ্গনের অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধারা এই দলের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিজেও তাঁর শিশু সন্তানদের নিয়ে দুঃসহ বন্দী জীবন কাটিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান দেওয়ার ব্যাপারটি তাই এই দলের কারো কাছ থেকে শিখতে হবে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করার উদ্দেশে প্রথম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার উদ্দেশে তিনিই মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াই মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো সংরক্ষণ প্রকল্প গ্রহণ করেন। তার নির্দেশে ঢাকা সিটি করপোরেশনে মেয়র বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ঢাকা মহানগরের প্রধান প্রধান সড়কগুলোর নামকরণ করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নামে।’