‘সরকার আমাদের ব্যথা বোঝে না’
‘শিক্ষকদের এভাবে হত্যা করা হলে জাতি মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। আসলে সরকার, প্রশাসন আমাদের রক্তক্ষরণ, ব্যথা বোঝে না।’ আক্ষেপের সুরে কথাগুলো বলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাবি শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে এ কথা বলেন ড. মো. শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক ড. এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। আজ ২০ দিন ধরে রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে রাবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।
মানববন্ধনে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আনসার উদ্দীন বলেন, ‘শুধু সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। আমাদের নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, শক্তি সঞ্চার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, রেজাউল করিমের মতো মানুষকে যখন খুন করা হয়, তখন আমরা সবাই হত্যার উপযোগী। তাই আসুন, আমরা সবাই এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। তা ছাড়া হত্যার মিছিল থামবে না।’
এ সময় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ফয়জার রহমান বলেন, ‘কত দিন হয়ে গেল, এ আন্দোলনের কোনো ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি না। জানি না, এ আন্দোলন কতদূর যাবে, নাকি স্তিমিত হয়ে যাবে। কারণ, অতীতের হত্যা মামলাগুলোর পরিণতি আমাদের শঙ্কিত করে তোলে।’
দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এস এম আবু বকর বলেন, ‘সভ্যতা আজ ধ্বংসের কিনারায় এসেছে। যারা খুন করছে, তারা এ সমাজেরই অংশ। আর আমি সমাজের একজন হয়ে এ হত্যার দায় এড়াতে পারি না। যেখানেই হত্যা হবে, সেখানেই আতঙ্ক, প্রতিহিংসা জাগ্রত হবে এবং মনুষ্যত্ব ক্ষয় হবে। তাই এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
রাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইসমাইল হোসেনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য দেন বাংলা বিভাগের প্রভাষক গৌতম গোস্বামী এবং ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এন্তাজুল হক, প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খানসহ দুই শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। মানববন্ধন শেষে তাঁরা একটি মৌন মিছিল বের করে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। পরে ‘মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চে’ সমাবেশ করেন তাঁরা।