চার পুলিশের নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র নাজমুল হোসাইনকে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমতা চাওয়ায় চার পুলিশ সদস্যকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ৯ জুলাই দিন ধার্য করা হয়েছে।
পুলিশের ওই সদস্যরা হলেন আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহসিনুল কাদির, উপপরিদর্শক (এসআই) নাহিদ, কনস্টেবল সেন্টু ও হালিম।
আদালতে পুলিশের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু ও অনাবিল আনন্দ রায়।
বাসচাপায় দুই সহপাঠীর নিহত হওয়ার ঘটনায় জাবির অসুস্থ ছাত্র নাজমুল হোসাইনকে গত ২৯ মে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আশুলিয়া থানার ওসিসহ দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তলব করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অসুস্থ নাজমুলকে হাতকড়া পরা অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া কেন বেআইনি হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার ও আশুলিয়া থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
সংবাদপত্রে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে আদালত এ রুল জারি করেন। আদালতে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২৬ মে ভোর ৫টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকায় বাসের ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আল বেরুনী হলের মার্কেটিং বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের আরাফাত নিহত হন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার হয় ৪২ শিক্ষার্থী। আহত হয় অনেকে। পরে অবশ্য ৪২ শিক্ষার্থীর জামিনও হয়।
এদিকে, আহত এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে সোমবার একটি ইংরেজি দৈনিকে ‘হ্যান্ডক্যাপড টু হসপিটাল বেড’ এ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন আহত হওয়ার পর তাঁর বন্ধুরা তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে ভর্তি করে। কিন্তু পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করায়। যেখানে হাসপাতালের বিছানার সঙ্গে তাঁর এক হাতে হাকতড়া পরানো হয়। খাওয়ার সময় হাতকড়া খুলে দিতে অনুরোধ করলেও পুলিশ তা খুলে দেয়নি।