ভারতের সেনা অভিযানে মিয়ানমারের ক্ষোভ
সীমান্ত পেরিয়ে দেশের মধ্যে সামরিক অভিযান চালানোর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মিয়ানমার। এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে এ ক্ষোভ জানানো হয়। মিয়ানমার বলেছে, তার ভূখণ্ডে কোনো বিদেশি সামরিক অভিযান মেনে নেওয়া হবে না। অন্য দেশগুলোর উচিত তাদের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা।
বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, গত বুধবার মিয়ানমারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত গৌতম মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেশটির কর্তৃপক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মিয়ানমার কড়া ভাষায় ভারতের হামলার প্রতিবাদ জানায়।
এ ছাড়া মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের পরিচালক জও তে নেইপিদো থেকে টেলিফোনে কলকাতা টেলিগ্রাফকে বলেছেন, ‘আমরা মিয়ানমারের ভূখণ্ডে কোনো বিদেশী সেনা অভিযান মেনে নেব না। এবং আমি বলতে চাই, প্রত্যেক দেশকে অবশ্যই অন্য দেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করা উচিত।’
এক সেমিনারে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকার হামলার বিষয়ে কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা জানান। তিনি শুধু জানান, সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। এর আগে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়, বিদ্রোহীদের ধাওয়া করতে গিয়ে সীমান্ত পার হয়ে যায় সামরিক বাহিনী।
মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ক্ষেত্রেই দেশটির মধ্যে ভারতের সামরিক অভিযানের কথা অস্বীকার করা হয়। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের ফেসবুক পাতায় দাবি করা হয়, কোনো ভারতীয় সেনা সীমান্ত পার হয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেনি। আর মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মূল ওয়েবসাইটে বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী দেশটিতে কোনো বিদেশি সেনার প্রবেশ নিষিদ্ধ।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক মিয়ানমারের এক সাংবাদিকের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানায়, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আশঙ্কায় ছিল, ভারত সরকারের অভিযান চালানোর বর্ণনার কারণে তারা সমালোচনায় পড়বে। ওই সাংবাদিক আরো জানান, ৭০ জনের কমান্ডো সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের মধ্যে হামলা চালিয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ভারত সরকারের দুজন ইউনিয়ন মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর ও প্রকাশ জাভেদকার এক বিবৃতিতে জঙ্গিদের অনুসরণ করে সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের মধ্যে হামলা চালানোর কথা জানান। জাভেদকার বলেন, জঙ্গি দমনে প্রয়োজনে সীমানা পেরোতেও ভারত দ্বিধা করবে না, এটি তারই শিক্ষা।
তবে বৃহস্পতিবার থেকে ভারত সরকার হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে। আর পূর্বে মন্তব্যকারী দুই ইউনিয়ন মন্ত্রীকেই এ বিষয়ে কথা বলার জন্য পাওয়া যায়নি।