রম্য
মশাদের আমরা যা যা ভাবতে পারি
এতদিনে মশা আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মশাই হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাকে নিয়ে অধিকাংশ সিটি মেয়রের ভাবনার কমতি নেই। লাখো-কোটি মানুষের জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মশা। এই মশাকে আমরা অনেকে অনেক কিছু ভেবে থাকি বা ভাবা উচিত। তারই কিছুটা নমুনা নিচে দেওয়া হলো।
চিরসবুজ গায়ক
যদি কারোর কাছে এককথায় প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া হয় যে, মশা গুনগুন করে কী করে? সঙ্গে সঙ্গে সে উত্তর দেবে, অবশ্যই গান করে! এবার আসুন অন্য কথায়, যে গান করে তাকে তো সবাই গায়ক বলবে না কি? আর সেই গায়কের গান করার ফর্ম যদি আজীবন থাকে! তাহলে তো আর কোনো কথায় নেই, যাকে বলে একদম, একমাত্র চিরসবুজ গায়ক।
চিড়িয়াখানার দর্শনার্থী
চিড়িয়াখানায় সচরাচর দেখা যায়, খাঁচার ভেতর প্রাণী থাকে আর অন্যদিকে খাঁচার বাইরে থেকে সাধারণ দর্শনার্থীরা তাদের দেখতে থাকে। ঠিক তেমনিভাবে দেখা যায়, আমরা মানুষ সকল আমাদের মশারি নামক খাঁচার ভেতর লুকিয়ে থাকি, আর বাইরে থেকে মশা শ্রেণি আমাদের ঠিক সেই রূপ তাকিয়ে দেখছে, যেমনিভাবে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীরা খাঁচার ভেতর দেখতে থাকে।
রক্তচোষা ডাইনী
ভূতের গল্পে বা হরর মুভিতে দেখা যায় এক শ্রেণির রক্তচোষা ডাইনীর চরিত্র। যাদের কাজই হলো, তাজা মানুষের রক্তচোষা। মশাকে সেই রক্তচোষা ডাইনীর মতোই মনে হয় অনেকের, কেননা মশারাও তাজা মানুষের তাজা রক্ত ভক্ষণ করতেই বেশি পছন্দ করে এবং সেটা করেও থাকে।
প্রাকৃতিক চিকিৎসক
সাধারণত গ্রামগঞ্জে দেখা যায়, চিকিৎসকের কাজই হলো, ইনজেকশন পুশ করা, রক্ত কালেক্ট করা ইত্যাদি কাজ করা। তেমনিভাবে লক্ষ করা যায়, মশাও বেশ সুন্দরভাবে ইনজেকশন পুশ করে এবং ব্লাড সংরক্ষণ করে থাকে। মশাদের অবস্থান হলো প্রকৃতিতে! সেই সূত্র অনুযায়ী, মশারাও হলো গিয়ে একপ্রকার প্রাকৃতিক চিকিৎসক।
স্বল্প আয়ুর পাখি
আমরা জানি, মশাদের আয়ু খুব বেশি হলেও তিন থেকে সাড়ে তিনদিন। এদিকে মশারাও অনেকটা পাখির মতো! কেননা, পাখির যেমন পাখা আছে, তেমনি মশারও পাখা আছে। আবার পাখিও যেমন ডিম পাড়ে, তেমনিভাবে মশারাও খুব করে ডিম পাড়ে। আর যেহেতু মশাদের আয়ু খবই কম বা অল্প, তাই মশাকেও সার্বিকভাবে স্বল্প আয়ুর পাখি বলা যেতেই পারে নাকি বলুন?
ঐতিহ্যবাহী উড়ন্ত বাহন
যখনই প্রশ্ন করা হয়, ডেঙ্গু জ্বরের ভাইরাস আসে কীভাবে? তখনই জানা যায়, ডেঙ্গু মশাই হলো এর একমাত্র বাহক। আবার যদি বলা হয়, ম্যালেরিয়া-ফাইলেরিয়া কীভাবে হয়? তখনো জানতে পারা যায়, এডিস মশাসহ আরো বিভিন্ন প্রকার মশারা এসব ভাইরাস বহন করে নিয়ে আসে! আর এমন একজন বাহক যেহেতু উড়ে বেড়াতে পারে, সেহেতু এটাকে উড়ন্ত বাহন হিসেবে আখ্যা দেওয়াই যায়। শুধু তাই নয়, একে ঐতিহ্যবাহী উড়ন্ত বাহন বললেও ভুল হবে না।