রিয়াল-রোনালদোর আধিপত্য এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জানা-অজানা
রেকর্ড ১৫তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের দ্বারপ্রান্তে রিয়াল মাদ্রিদ। প্রতিপক্ষ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড শিরোপা জিতেছে একবার। সেটিও ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে। জার্মান ক্লাবটির তৃতীয় ফাইনাল এটি। ২০১৩ সালের পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছে দলটি। এই সময়ের মধ্যে মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে পাঁচবার। তাই বলে, ডর্টমুন্ডকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছে না মাদ্রিদ।
আগামী ১ জুন বাংলাদেশ সময় দিনগত রাত ১টায় লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে জমজমাট এক ফাইনালের অপেক্ষায় ফুটবল ভক্তরা। এর আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের জানা-অজানা নানা দিক।
নামবদল
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এটি ৬৯তম আসর। ১৯৫৫ সালে প্রথমবার মাঠে গড়ায় টুর্নামেন্টটি। তবে, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নামে ৩২তম আসর এটি। শুরুতে এর নাম ছিল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ক্লাব কাপ। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ (ইউসিএল)।
রিয়াল মাদ্রিদের আধিপত্য
ইউরোপিয়ান কাপ কিংবা ইউসিএল—নাম পরিবর্তন হলেও রিয়াল মাদ্রিদের আধিপত্য ছিল সবসময়ই। টুর্নামেন্টের প্রথম পাঁচ আসরের চ্যাম্পিয়ন মাদ্রিদ। টানা পাঁচ শিরোপা জয়ের যে রেকর্ড আজ অবধি ভাঙতে পারেনি কোনো দল। আধুনিক যুগেও রেকর্ড গড়েছে মাদ্রিদ। ২০১৬ থেকে ২০১৮, জিনেদিন জিদানের অধীনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের হ্যাটট্রিক করে স্প্যানিশ ক্লাবটি। এই রেকর্ডও নেই অন্য কারো। সবমিলিয়ে সর্বোচ্চ ১৪টি শিরোপা মাদ্রিদের দখলে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাত শিরোপা নিয়ে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান আছে অনেক পেছনে। যে কারণে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রাজাদের রাজা বলা হয় রিয়াল মাদ্রিদকে।
হলুদ উৎসবের অপেক্ষায় ডর্টমুন্ডের
২০১৩ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল খেলে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। সেবার ফাইনালে হার মানে স্বদেশী ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের কাছে। তারপর এক দশক পার হলেও ফাইনালের মঞ্চে দেখা যায়নি তাদের। এক দশক পর আবারও ফাইনালে উঠেছে দলটি। অপেক্ষা মাদ্রিদকে হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের। যেটি বেশ কঠিনই বটে। ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে একমাত্র শিরোপা জিতেছিল দলটি।
উয়েফা ক্রিস্টিয়ানো লিগ
রিয়াল মাদ্রিদ যদি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা হয়, রোনালদো রাজপুত্র। টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি ১৮৩ ম্যাচে অংশ নিয়েছেন তিনি। সবচেয়ে বেশি গোলও তাঁর দখলে, ১৪০টি। এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোলেও প্রথম তিনিটি নাম তার। ১৭, ১৬ ও ১৫। যে রেকর্ড নেই আর কারও। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে মোট পাঁচবার ইউসিএল জিতেছেন সিআরসেভেন। অনেকে আদর করে ইউসিএলের পূর্ণরূপ দিয়েছেন উয়েফা ক্রিস্টিয়ানো লিগ।
অনন্য ওয়েম্বলি
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে। রেকর্ড অষ্টমবারের মতো এখানে টুর্নামেন্টটির ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে। ওয়েম্বলির চেয়ে বেশি ফাইনাল আর কোনো স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নামকরণ হওয়ার পর অবশ্য শেষবার ২০১৩ সালে ফাইনাল হয়েছিল লন্ডনের মাঠটিতে। এবারের ফাইনাল ঘিরে স্টেডিয়ামকে ভিন্নভাবে সাজিয়েছে ওয়েম্বলি। ১৯৯২ সালে ইউরোপিয়ান কাপের সর্বশেষ আসরে যেমন ছিল স্টেডিয়াম, এই ফাইনালের জন্য সেভাবে সাজানো হয়েছে ওয়েম্বলিকে।
ফাইনালের কায়দা-কানুন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল এক ম্যাচেরই হয়। নকআউট স্টেজের অন্যসব ম্যাচের মতো দুটি করে খেলা হয় না। এক ম্যাচেই নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ফলাফল না এলে খেলা গড়াবে অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ১৫ মিনিট করে দুই হাফে অনুষ্ঠিত হবে খেলা। সেখানেও ফল না আসলে রেফারি দ্বারস্থ হবেন টাইব্রেকারের। যেখানে প্রথমে পাঁচটি করে শট নেবে দুই দল। তাতেও সমতা থাকলে সাডেন ডেথে গড়াবে। সাডেন ডেথের নিয়ম অনুসারে, এক দল গোল করলে এবং অপর দল মিস করে পিছিয়ে গেলে ম্যাচ তখনই শেষ।