মিয়ানমারে সেনা অভিযানে নিহত ৮২, প্যাগোডা প্রাঙ্গণে লাশের স্তূপ
মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনাবাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানে অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ কথা জানিয়েছে।
গত শুক্রবার বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক দমনপীড়ন চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। বিক্ষোভকারীদের হত্যার পর তাদের মরদেহ লুকিয়ে রাখে সেনাবাহিনী। এ কারণে মৃত্যুর তথ্য জানতে দেরি হয়।
বাগো শহরের নিহত বিক্ষোভকারীদের লাশ সেখানকার জেয়র মুনি প্যাগোডা প্রাঙ্গণে স্তূপ করে রাখে সেনাবাহিনী। পুরো এলাকা ঘিরে রাখা হয়। স্বেচ্ছাসেবী পর্যবেক্ষক সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) এমনটি জানায়।
এএপিপি জানায়, শনিবার সকাল নাগাদ মৃতের সংখ্যা জানা সম্ভব হয়নি। পরে এসব তথ্য উদ্ধার হয়। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর ভারী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বাগো শহরের বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক ইয়ে তুত দেশটির সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাউকে বলেন, ‘এটা গণহত্যা ছাড়া কিছু নয়। প্রতিটি জায়গায় গুলি করে মানুষকে হত্যা করা হয়।’
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এক বছরের জন্য দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। তখন থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী বিক্ষোভকারীরা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছেন।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে দেশটির নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। সামরিক বাহিনী এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুললেও নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়ে দেয়। পরে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসে সেনাবাহিনী।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার এ পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি মানুষ হত্যা করেছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে গত শুক্রবার রাজধানী নাইপিদোয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল জ মিন তুন দাবি করেন, বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ২৪৮ জন বেসামরিক লোক এবং ১৬ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন।