গাজার হাসপাতালে তীব্র ক্ষুধার সঙ্গে বাড়ছে হতাশা : ডব্লিউএইচও
চলতি সপ্তাহান্তে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের হাসপাতালগুলোর কার্যক্রম সীমিত আকারে চালু করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তারা বলছে, তাদের নেতৃত্বে চালু করা হবে হাসপাতালের কার্যক্রম। একইসঙ্গে উত্তর গাজার হাসপাতালগুলোর অবস্থার কথা জানিয়ে ডব্লিউএইচও বলছে, সেখানে হতাশা বাড়ছে। সহায়তার ট্রাক প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে ক্ষুধার্তরা। খবর এএফপির।
গতকাল রোববার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) ডব্লিউএইচওর প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রেয়াসুস এক পোস্টে লেখেন, ‘জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এর অংশীদাররা গাজায় সহায়তা প্রদান করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি। এ ছাড়া উত্তর গাজার বৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফায় মেডিকেল সরঞ্জামাদি দেওয়া হচ্ছে।’
তেদরোস বলেন, ২৩ ডিসেম্বরের মিশনে অংশগ্রহণকারীরা যা দেখেছিল তা হলো, তীব্র ক্ষুধার কারণে হতাশা বাড়ছে। মানুষের স্বাস্থ্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে অংশীদাররা দ্রুত সময়ের মধ্যে খাদ্য ও পানির সরবরাহ বৃদ্ধির দাবি করছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, হামাসের হামলায় অন্তত এক হাজার ১৪০ জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া ২৫০ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় সশস্ত্র সংগঠনটি।
প্রতিশোধ নিতে ফিলিস্তিনের হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা ও পশ্চিম তীরে ক্রমাগতভাবে পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রণাধীন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরায়েলি বাহিনীর আকাশ, নৌ ও স্থলপথে চালানো হামলায় ফিলিস্তিনে অন্তত ২০ হাজার ৪০০ এরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
আর-শিফার প্রসঙ্গ টেনে সতর্ক করে তেদরোস বলেন, দুপক্ষের নিরলসহীন শত্রুতা ও ব্যাপক পরিমাণের আহত হাসপাতালটির ক্ষমতাকে হাঁটুর নিচে নিয়ে আসতে পারে। তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন, শনিবারের সরবরাহকৃত ১৯ হাজার ২০০ লিটার জ্বালানি হাসপাতালটির গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করবে। একইসঙ্গে আরও সহায়তার প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ইসরায়েলি হামলায় তাদের অক্সিজেন প্ল্যান্ট পুরোপুরিভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন পরিষেবা ধুঁকে ধুঁকে চলছে। বাস্তুচ্যুত প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে হাসপাতালে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
আল-শিফা হাসাপতালে পরিষেবা পুনরুদ্ধারে কাজ করা
ডব্লিউএইচওর জরুরি মেডিকেল টিমের সমন্বয়কারী শন ক্যাসি বলেন, অস্ত্রোপচার ওয়ার্ডগুলো বাস্তুচ্যুত মানুষে পরিপূর্ণ হয়ে রয়েছে। তাদের সেখান থেকে বের যাচ্ছে না। তারা ওয়ার্ডের দরজা পর্যন্ত খুলতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। এক ভিডিও বার্তায় ক্যাসি বলেন, এখানে আশ্রয় নেওয়ারা ক্ষুধার্ত। এখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি রয়েছে।