অথচ বাফুফের কাছ থেকে কোনো পুরস্কার পাচ্ছে না সাবিনারা
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবার শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। দেশের ফুটবলের অন্যতম সেরা সাফল্য বলে কথা, তাই অনেকেই ভেবেছিলেন পুরস্কারের বন্যায় ভাসবেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। কিছু পুরস্কারের ঘোষণা যে আসেনি, তা কিন্তু নয়। তবে যে ফেডারেশনকে এত বড় সাফল্য এনে দিয়েছে মেয়েরা, তাদের কাছ থাকে কোনো পুরস্কার পাচ্ছে না। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন বলে দিয়েছেন, আমার কাছে কোনো টাকা নেই।
শুধু তাই নয়, পুরো দেশ যখন আনন্দে মাতোয়ারা, বাফুফে ভবনে ছিল একেবারেই সাদামাটা পরিবেশ। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিমানবন্দরে সংবর্ধনা দেওয়া পর ছাদখোলা বাসে করে তাদের বাফুফে ভবনে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বাফুফেতে ছিল না তার রেশ।
তারপরও নারী ফুটবল দলের কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটেনের তেমন কেনো চাওয়া নেই। এত বড় সাফল্যের পর বাফুফের কাছে তাদের কোনো চাওয়া আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, আমাদের কোনো চাওয়া নেই। বাফুফে বা ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ভালো বুঝবে আমাদের মেয়েদের জন্য কি করা উচিত। আমাদের চাওয়া ভবিষ্যতে আরও বড় সাফল্য এনে দেওয়া। দেশকে আরও ভালো কিছু উপহার দেওয়া।’
অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের মুখে একবারও শোনা যায়নি কোনো আশার কথা। বরং স্বপ্ন পুরণ করতে পারে উচ্ছ্বসিত তিনি। এ ব্যাপারে সাবিনা বলেন, ‘আমাদের পরিশ্রম এবং সবার সমর্থনে এই স্বপ্নটা পূরণ করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে দেশের মানুষকে এভাবে হাসিখুশি রাখা।’
কোচ বা মেয়েদের মুখে কোনো চাওয়া ছিল না। কিন্তু বাফুফে ছিল নিশ্চুপ। এ ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের কাছে কোনো টাকা নেই। আমাদের অবিভাবক ক্রীড়া মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে দেখেবে। তবে আমাদের দুই সহসভাপতি সালাম মুর্শেদী ও আতাউর রহমান মানিক ৫০ লাখ করে এক কোটি টাকা দেবেন। এই টাকা এবং আরও যারা দেবেন সব টাকা এক সঙ্গে করে দলের প্রত্যেক সদস্যকে ভাগ করে দেওয়া হবে।’
শুধু ফেডারেশন থেকেও নয়, কাজী সালাউদ্দিন নিজেও কোনো পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা দেননি। অথচ ফুটবলের চরম বাজে সময়ে এই মেয়েরা দেশকে অনেক বড় সাফল্য এনে দিয়েছে। অন্যরা যত কিছুই দিক না কেন, অবিভাবক ফেডারেশনের কাছে তারা কিছু আশা করতেই পারে।
গত সোমবার ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধেই দুই গোল আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। আর দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে পায় তৃতীয় গোল। শামসুন্নাহার জুনিয়র একটি ও কৃষ্ণা রানি সরকার দুটি করে গোল করেন।
এটি সাফে মেয়েদের প্রথম শিরোপা জয়। এর আগে অনেকবারই ফাইনালে খেলেছিল তারা, কিন্তু একবারও শিরোপার উল্লাস করতে পারেনি। দীর্ঘ দিন পর অধরা শিরোপা এনে দিয়েছে তারা।