শেষের রোমাঞ্চে চট্টগ্রামের কাছে হারল মাহমুদউল্লাহর ঢাকা
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটিংয়ের শুরুতে হতাশা দেখে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। দ্রুত টপঅর্ডারদের হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে যায় দলটি। সেখান থেকে দলকে পথ দেখান তামিম ইকবাল। ব্যাট হাতে উপহার দেন ৭৩ রানের চমৎকার ইনিংস। কিন্তু তাতেও দলকে উদ্ধার করতে পারলেন না। শেষ ওভারে দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের দৃশ্যপট বদলে দেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। শেষের রোমাঞ্চে ম্যাচটিতে চট্টগ্রামের কাছে ৩ রানে হেরেছে মাহমুদউল্লাহর ঢাকা।
শেষ ওভারে সমীকরণটা খুব বেশি কঠিন ছিল না। জয়ের জন্য ছয় বলে ৯ রান দরকার ছিল ঢাকার। উইকেটে ছিলেন সেট বেটার তামিম। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় বোলিংয়ে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। স্ট্রাইক না পাওয়া তামিমকে মাঠ ছাড়তে হলো হতাশা নিয়ে। শেষ ওভারে পাঁচ বল খেলেও দলকে জয়ের বন্দরে নিতে পারেননি স্ট্রাইকে থাকা মোহাম্মদ নাঈম।
আজ মঙ্গলবার বিপিএলে দিনের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ১৪৮ রান তুলেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন শামীম হোসেন।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ টসের শুরুতেই অধিনায়কত্বে বদল এনে চমকে দেয় চট্টগ্রাম। ঢাকার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে টস করতে নামেন চট্টগ্রামের নতুন অধিনায়ক আফিফ হোসেন। বিপিএলের মাঝপথে এই নিয়ে তৃতীয়বার অধিনায়কত্বে বদল আনল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিতে অধিনায়ক নাঈম ইসলামকে সরিয়ে আফিফ হোসেনকে দায়িত্ব দিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শুধু অধিনায়কত্বে বদল আনাই নয়, এমনকি একাদশেও রাখা হয়নি নাঈমকে।
বারবার নেতৃত্বে বদল ও মাঠের বাইরের আলোচনার প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের পারফরম্যান্সে। এই ম্যাচেও শুরুতে ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারেননি চট্টগ্রামের ব্যাটাররা। ব্যাট হাতে শুরুতে হতাশ করেছেন জাকির হাসান। কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে ২৭ রানে সাজঘরে ফেরেন আফিফ। ২৪ বলে ২৬ রান করে আউট হন উইল জ্যাকস।
এরপর শেষ দিকে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন শামীম হোসেন। শেষ দিকে বেনি হাওয়ালের সঙ্গে জুটি বেধে চট্টগ্রামকে মোটামুটি লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন শামীম। ৩৭ বলে ৫২ রান করেন তিনি। হাওয়েল করেন ২৪ রান।
বল হাতে ২৪ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। সমান একটি করে নেন ফারুকি, মাহমুদউল্লাহ, আরাফত সানি, কায়েস আহমেদ, ইবাদত হোসেন।
১৪৯ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে হতাশা দেখে মিনিস্টার ঢাকা। স্কোরবোর্ডে ২১ রান তুলতেই গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে। ব্যর্থ হয়ে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ শাহজাদ, মাশরাফী ও ইমরান। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন তামিম ইকবাল।
ওই জুটিতে লড়াই জমিয়ে তোলে ঢাকা। দলীয় ৯২ রানে এই শক্ত জুটি ভাঙেন মিরাজ। ২৪ রানে মাহমুদউল্লাহকে সাজঘরে পাঠান এই অফ স্পিনার। অধিনায়ক ফিরলে সমীকরণ কঠিন হয়ে ওঠে ঢাকার। ব্যাটিংয়ে থেকে লড়াই জমিয়েও দলকে জয়ের বন্দরে নিতে পারেননি বাঁহাতি এই ওপেনার। ব্যাট হাতে শেষ পর্যন্ত তিনি খেলেন ৫৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস। তাঁর ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ৩টি ছক্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ২০ ওভারে ১৪৮/৬ (জাকির ১, জ্যাকস ২৬, আফিফ ২৭, মিরাজ ২, শামীম ৫২, আকবর ৯, হাওয়েল ২৪, মৃত্যুঞ্জয় ০ ; মাশরাফী ৪-০-২৪-১, ফারুকি ৪-০-৩২-১, কায়েস ৪-০-৩৩-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৫-১, ইবাদত ৪-০-৩৪-১)।
মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা : ২০ ওভারে ১৪৫/৬ (তামিম ৭৩, শাহজাদ ৭, ইমরান ৮, মাশরাফী ০, মাহমুদউল্লাহ ২৪, শুভাগত ২২, কায়েস ০, নাঈম ২ ; নাসুম ৪-০-১৫-১, মিরাজ ৩-০-২৯-১, শরিফুল ৪-০-২৮-২, হাওয়েল ৪-০-৪১-০, মৃত্যুঞ্জয় ৪-০-২১-২, জ্যাকস ১-০-৯-০)।
ফল : ৩ রানে জয়ী চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।