মেলা
চড়ক মেলা
প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে নড়াইল জেলার কালিয়া সদর উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে চড়ক মেলা। কালিয়া পৌরভবনের সামনে ঠাকুরবাড়িতে চৈত্রের শেষ তারিখে চড়ক পূজা হয়। কালিয়ার ২০০ বছরের পুরোনো চড়ক মেলা বৈশাখের দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় ৪৫ ফুট লম্বা চড়ক গাছটির উপরে বাঁশ বেঁধে চার কোনা আকৃতির চড়কি বানানো হয়। চড়কির চার কোনায় চারটি দড়ি ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ঝোলানো প্রতিটি দড়ির সঙ্গে কাপড় বেঁধে বিশেষ কায়দায় চারজনের পিঠে বাঁধা হয়। তারপর শুরু হয় চড়কি ঘুরানোর কাজ। নিচ থেকে বাদ্য বাজনার সঙ্গে সঙ্গে ২৫-৩০ জন যুবক চড়কির দড়ির সঙ্গে বাঁধা চারজনকে বল প্রয়োগ করে দ্রুত বেগে শূন্যে ঘোরাতে থাকে। প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে চড়কটি ঘোরানো হয়। এভাবে প্রতিবার চারজন করে মোট ১২ জন শূন্যে ঘোরানোর মধ্য দিয়ে চড়ক ঘূর্ণয়ন পর্ব শেষ হয়। সেইসঙ্গে চলতে থাকে মেলা এবং গান-বাজনা। প্রচলিত আছে, প্রায় শত বছর আগে চড়ক মেলা শেষে ওই চড়ক গাছটিকে সেখানকার গঙ্গা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো। তারপর চৈত্র মাসের ৩০ তারিখে ১০ জন লোক নদীর কাছে গিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজালে কিছু সময় পর চড়ক গাছটি নিজে নিজে পানির ওপরে ভেসে উঠত। তখন দড়ি দিয়ে গাছটিকে টেনে ওপরে আনা হতো। সে অনুযায়ী মেলা শেষে চড়ক গাছকে ঠাকুরবাড়ির পুকুরে ডোবানো হয়। তবে এখন আগের মতো বাদ্যবাজনা শুনে ভেসে ওঠে না।