দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাকটির ফিটনেস ছিল না
ঈদে বাড়ি ফেরার পথে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় যে সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি উল্টে ১৭ জন নিহত হয়েছেন সেটির কোনো ধরনের ফিটনেস সার্টিফিকেট ছিল না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
আজ শনিবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার ঢাকা-রংপুর কলাবাড়ী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হয়েছেন আরো ১৫ জন।
দুপুরে বিআরটিএর রংপুরের সহকারী পরিচালক আবদুল কুদ্দুস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ট্রাকটি রানা এন্টারপ্রাইজের। এর নম্বর রংপুর ট ১১-০৩২৮। এর কোনো ধরনের ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই।’
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন কহিনূর ইসলাম, বেগম (১০), জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া (২৫), দেলোয়ার হোসেন, আনিসুজ্জামান, জসীম উদ্দিন, ঝন্টু মিয়ার মেয়ে সুবর্ণ আক্তার (৯), শহীদুল ইসলাম, আলমগীর হোসেন, সাদ্দাম হোসেন, মনির হোসেন, রফিকুল ইসলাম, একরাম আলীর ছেলে খলিলুর রহমান, রবিউল ইসলাম, নাসিমা আক্তার ও আজিজুর রহমান।
নিহতদের বেশির ভাগের বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বত্রিশ হাজারি গ্রামে। বেশির ভাগই ত্রিশোর্ধ্ব তরুণ-তরুণী। তাঁরা গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।
আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা অভিযোগ করেছেন, ঘুমের কারণে চালক তাঁর সহকারীকে দিয়েছিলেন ট্রাকটি চালানোর জন্য। কিন্তু সহকারীও ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন। আর এ কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগইই সিমেন্টের বস্তার নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন।
দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কহিনূর ইসলামের স্ত্রী (৩৫) ও আরেক নারী (তাঁর মেয়ে মারা গেছে) সকাল সাড়ে ৮টায় এনটিভি অনলাইনকে জানান, তাঁরা গাজীপুর থেকে সিমেন্ট ভর্তি এই ট্রাকে উঠেছিলেন। চালক রাতভর গাড়ি চালান। তিনি মাঝে মাঝেই ঝিমুচ্ছিলেন। দুর্ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার আগে এসে চালক গাড়ি চালানোর জন্য তাঁর সহকারীকে (হেলপার) দেন।
হেলপার প্রথমে ভালোভাবে চালালেও পরে তিনিও ঝিমুনি শুরু করেন। এ কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন বেঁচে যাওয়া দুই নারী। তাঁরা জানান, দুর্ঘটনার সময় তাঁরা ট্রাকের কেবিনে ছিলেন। এ কারণেই বেঁচে গেছেন।