জনমত তৈরি করছেন ভাড়াটে বিশেষজ্ঞরা
কয়লাভিত্তিক রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির পক্ষে জনমত তৈরিতে ভাড়াটে বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি।
আজ শনিবার রাজধানীর মুক্তি ভবনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তি প্রসঙ্গে সরকার ও কোম্পানির মিথ্যাচার, বিভ্রান্তির জবাবে আলোচনা সভা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে এ অভিযোগ করেন তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
নিজের বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সেদিন দেখলাম এক বিশেষজ্ঞ বলছেন যে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশে যে পানি থাকবে, সেই পানিদূষণটা পরিষ্কার করা যাবে এমনভাবে যে সেই পানি পান করা যাবে। আমার খুব আগ্রহ যে এই ধরনের বিশেষজ্ঞদের কোনো কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশের পানি তাঁকে পান করানো। এটা আমার খুব ইচ্ছা। যেহেতু ভাড়াটে কথার কোনো লাগাম থাকে না, সে জন্য এ ধরনের কথাবার্তা আমরা শুনি।’
এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে জনমত তৈরিতেও জোরেশোরে কাজ করা হচ্ছে বলে কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়। রামপাল চুক্তির পক্ষে হঠাৎ করে যাঁরা বিশেষজ্ঞ হয়ে কথা বলা শুরু করেছেন, তাঁরা কোন বিদেশি কোম্পানিতে কাজ করছেন তা তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান আনু মুহাম্মদ।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ আরো বলেন, বিবিয়ানা থেকে যখন গ্যাস রপ্তানির কথা উঠেছিল তখন অনেক ভাড়াটিয়া বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, ‘গ্যাসের ওপর ভাসছে দেশ’, ‘এখনই গ্যাস রপ্তানি না করলে দেশের উন্নয়ন হবে না’ইত্যাদি। এখন প্রমাণিত হয়েছে যে সে সময় গ্যাস রপ্তানি হলে দেশেরই ক্ষতি হতো। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়া, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা তোলা, টাটাকে স্বল্পমূল্যে গ্যাস সরবরাহ করে শিল্প স্থাপন করতে দেওয়া, কনোকো-ফিলিপসকে অসম চুক্তির মাধ্যমে ব্লক ইজারা দেওয়া নিয়ে এসব বিশেষজ্ঞরা যেসব কথা বলেছিলেন, তা শুনলে দেশেরই সর্বনাশ হতো। তাই মনে রাখতে হবে এসব বিশেষজ্ঞ দেশের স্বার্থ নয়, কোনো না কোনো কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা করেন।
এ সময় সুন্দরবন ধ্বংসী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে আগামী ২০ আগস্ট দিনব্যাপী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ও দেশব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা, প্রকৌশলী মাহবুব সুমন, মাহা মির্জা, রাজনীতিক রুহিন হোসেন প্রিন্স, আব্দুস সাত্তার, মিজানুর রহমান প্রমুখ।