ইঞ্জিনিয়ারের নির্দেশে শিক্ষার্থী আকাশকে পিটেয়ে হত্যা করা হয় : র্যাব
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়ায় গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বরাব সরকারি প্রাথমিক স্কুলের নির্মাণাধীন ভবনে প্রবেশ করে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আকাশসহ তার বেশ কয়েকজন বন্ধু। এতে নির্মাণাধীন সাইটের শ্রমিকরা তাদের ধাওয়া করলে বন্ধুরা পালিয়ে যেতে পারলেও আকাশকে আটক করেন তারা। পরে ভবনটির ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেমের নির্দেশে লোহার রড চুরির অভিযোগে বাঁশের সঙ্গে বেঁধে লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে মারধর করা হয়। পরদিন আকাশের মৃত্যু হয়।
আজ শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
আকাশ মারা গেলে তার ফুফু মোহাম্মদপুর থানায় বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এই ঘটনায় জড়িত ইঞ্জিনিয়ারসহ তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মো. মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে প্রান্ত, মো. ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রাথমিক জিজ্ঞসাবাদের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন জানান, সারা রাত পৈশাচিক ও নির্মমভাবে লাঠি, লোহার রড ও স্ট্যাম্প দিয়ে ব্যাপক মারধর করায় ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। পরদিন সকাল ৬টার দিকে ভুক্তভোগী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গ্রেপ্তারকৃতরা তার ফুফুকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায়। ফুফু ঘটনাস্থলে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় আকাশকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে যান। সকাল ৮টার দিকে আকাশের মৃত্যু হয়।
এদিকে, মৃত্যুর সংবাদ শুনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে ইঞ্জিনিয়ার ও শ্রমিকরা নির্মাণাধীন সাইট থেকে পালিয়ে রাজধানীর মগবাজার ও রমনাসহ বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে চলে যান।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, মোয়াজ্জেম স্কুলের নির্মাণাধীন সাইটের সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। তার নির্দেশে ভুক্তভোগীকে বাঁশের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন করে এবং মোবাইলে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। আর ফিরোজ ও মোস্তাফিজুর আকাশকে নির্যাতন করে। ফিরোজ পেশায় একজন শ্রমিক। মোস্তাফিজুর নির্মাণাধীন সাইটের ফোরম্যান হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।