পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ নিয়ে যা বললেন বিশ্লেষকরা
বিদায়ী সপ্তাহে (রোববার থেকে বৃহস্পতি) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) বেড়েছে দশমিক ১৭ পয়েন্ট। পিই রেশিও বাড়লেও ডিএসইতে বিনিয়োগ সম্পূর্ণ নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানির পিই রেশিও ১৫ পয়েন্ট ছাড়ালেই তা বিনিয়োগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনও (বিএসইসি) মার্জিন ঋণের যোগ্যতা হিসাবে সর্বোচ্চ ৪০ পিই রেশিও বেঁধে দিয়েছে। সে হিসেবে, ৪০ পর্যন্ত পিইধারীর শেয়ার বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ বলে জানায় বিএসইসি। এসব বিবেচনায় গত বৃহস্পতিবারের ডিএসইয়ের পিই রেশিও হিসেবে বিনিয়োগ নিরাপদ অবস্থানে আছে। তেমনি খাতভিত্তিক বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে একই অবস্থা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, সিঙ্গেল ডিজিট পিই রেশিও বিনিয়োগের জন্য অতি উত্তম। তবে পিই রেশিও ১৫ পয়েন্ট পর্ষন্ত বিনিয়োগের জন্য কিছুটা নিরাপদ। সেই হিসেবে, বর্তমানে ডিএসইর পিই রেশিও দাঁড়িয়েছে ১১ পয়েন্টের ঘরে। যা ডিএসইতে বিনিয়োগ নিরাপদ বলে গণ্য। একই প্রসঙ্গে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বলেন, ডিএসইর পিই রেশিও বর্তমানে ১১ পয়েন্টের ঘরে। যা বিনিয়োগ জন্য ভাল।
ডিএসইর পর্যালোচনায় দেখা যায়, গেল সপ্তাহের শেষে (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করেছে ১১ দশমিক ১৬ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২ মে) অবস্থান ছিল ১০ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে। যা বিগত সময়গুলোর তুলনায় কম। আবার ডিএসইতে খাতভিত্তিক হিসেবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশি নিরাপদ অবস্থানে আছে ব্যাংক খাত। খাতটিতে গত বৃহস্পতিবার পিই রেশিও অবস্থান করে ছয় দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। যদিও তার আগের সপ্তাহের শেষদিন ছিল ছয় দশমিক ৫২ পয়েন্টে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিই রেশিও বাড়লেও খাতটিতে বিনিয়োগে সবচেয়ে বেশি নিরাপদে আছে। অপরদিক সিরামিক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৮৫ দশমিক শূন্য দুই পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে বৃহস্পতিবার (২ মে) অবস্থান ছিল ৮৫ দশমিক শূন্য তিন পয়েন্টে। পিই রেশিও হিসেবে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকির শীর্ষ অবস্থানে আছে এ খাতটি।
বর্তমানে খাতভিত্তিক হিসেবে ব্যাংকের পর বিনিয়োগ নিরাপদ জায়গায় আছে টেলিকম খাত। খাতটির পিই রেশিও সাত দশমিক ৮৬ পয়েন্টে। পরে অবস্থানে রয়েছে সিমেন্ট খাত। খাতটির পিই রেশিও ১০ দশমিক ৯২ পয়েন্টে। এরপরে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের পিই রেশিও ১১ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ১৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্টে।
খাতভিত্তিক পিই রেশিওগুলোর মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৩ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে, প্রকৌশল খাতে ১৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্টে, বিমা খাতে ১৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে, নন ব্যাংকিং আর্থিক খাতে ১৪ দশমিক ৯৯ পয়েন্টে, বস্ত্র খাতে ১৬ পয়েন্টে, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে ১৮ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট, সেবা ও আবাসন খাতে ১৯ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট, আইটি খাতে ২১ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে, পেপার ও প্রিন্টিং খাতে ২২ দশমিক ২০ পয়েন্টে, মিউচুয়াল ফান্ড খাতে ২৮ দশমিক ১০ পয়েন্টে, ট্যানারি খাতে ৩১ দশমিক ২২ পয়েন্টে, বিবিধ খাতে ৩১ দশমিক ২২ পয়েন্টে, পাট খাতে ৩২ দশমিক ২৩ পয়েন্টে এবং সিরামিক খাতে ৮৫ দশমিক শূন্য দুই পয়েন্টে অবস্থান করছে।